সময়কাল ডেস্ক :অং সান সু চিসহ রাজবন্দিদের মুক্তি ও গণতন্ত্র ফিরে পাওয়ার দাবিতে হাজার হাজার বিক্ষোভকারী মিয়ানমারের রাজপথে নেমে এসেছে। সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদে তারা টানা দ্বিতীয় দিনের মতো বিক্ষোভ করেছে। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত বিক্ষোভ চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে তারা। খবর আলজাজিরা, বিবিসি ও রয়টার্সের।
মিয়ানমারের প্রধান শহর ইয়াঙ্গুনে কয়েক হাজার বিক্ষোভকারী অবস্থান নেয়। সেখানে মি উইন নামে ৩৭ বছর বয়স্ক এক বিক্ষোভকারী বলেন, আমরা আন্দোলন অব্যাহত রাখব এবং দাবিতে অনড় থাকব যতক্ষণ না গণতন্ত্র ফিরে পাই।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে এএফপির খবরে বলা হয়েছে, ইয়াঙ্গুন বিশ্ববিদ্যালয়ের কাছে পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ঘিরে রাখে যাতে আন্দোলন সহিংস না হয়ে উঠে।
আন্দোলনকারীরা সু চির দল এনএলডির প্রতীকের সঙ্গে মিলিয়ে লাল রঙের বেলুন নিয়ে বিক্ষোভ করে। এসময় তারা স্লোগান দেয়, আমরা সামরিক একনায়ক চাই না, চাই গণতন্ত্র।
এদিকে বিক্ষোভ দমাতে দেশব্যাপী ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ করে দিয়েছে মিয়ানমারের জান্তা সরকার।
এর প্রতিক্রিয়ায় দেশটির রাজধানী নেপিদোতে বিক্ষোভ করেছেন বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
নেটব্লকস ইন্টারনেট অবজারভেটরি জানিয়েছে, প্রায় সম্পূর্ণভাবে ইন্টারনেট সংযোগ বন্ধ হয়ে গেছে। সংযোগ সাধারণ অবস্থার চেয়ে ১৬ শতাংশ নিচে নেমে এসেছে। বিবিসি বার্মিজ শাখাও ইন্টারনেট বন্ধের খবর নিশ্চিত করেছে।
প্রথমে ফেসবুক। তার পর টুইটার-ইনস্টাগ্রাম। সবশেষ রোববার সন্ধ্যায় বন্ধ করা হয় ইন্টারনেট। এর প্রতিবাদে হাজার হাজার মানুষ রাস্তায় নেমে আসেন।
তবে বিক্ষোভ সহিংস ছিল না। ইয়াঙ্গুনের সিটি হল এলাকায় দেখা গেছে, পুলিশ সশস্ত্র অবস্থায় অবস্থান নিয়েছে। আর বিক্ষোভকারীরা পুলিশকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন।
কারখানার শ্রমিক, শিক্ষার্থীসহ বিক্ষোভকারীরা সু চিসহ সামরিক সরকারের হাতে আটক ব্যক্তিদের মুক্তি দাবি করেন। তারা ইয়াঙ্গুনের রাস্তায় মিছিল নিয়ে বিক্ষোভ করেন। বাসগুলো হর্ন বাজিয়ে বিক্ষোভে সমর্থন প্রকাশ করেন। বিক্ষোভকারীরা পুলিশের হাতে গোলাপ ও পানির বোতল তুলে দিয়ে নতুন শাসনব্যবস্থার প্রতি সমর্থন না দিয়ে বিক্ষোভে সমর্থন দেওয়া আহ্বান জানান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হ্যাশট্যাগ উইনিড ডেমোক্রেসি, হ্যাশট্যাগ হিয়ার দ্য ভয়েস অব মিয়ানমার ও ফ্রিডম ফর ফিয়ার নামে আন্দোলন চলে। এসব বিক্ষোভ দমাতে মিয়ানমার সরকার গত শুক্রবার ফেসবুক বন্ধ করে দেয়।
রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যম ও সম্প্রচারে কড়াকড়ি থাকায় মিয়ানমারে ফেসবুক মানুষের খবর পাওয়ার প্রধান উৎস হিসেবে বিবেচিত হয়। সেনা অভ্যুত্থান ও বিক্ষোভের নানা খবর ফেসবুকে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। এটি বন্ধের পরে টুইটার ও ইনস্টাগ্রামে কয়েক হাজার ব্যবহারকারী সক্রিয় হন। তারা সেনা অভ্যুত্থানের প্রতিবাদ জানাতে হ্যাশট্যাগ ব্যবহার শুরু করেন। পরিপ্রেক্ষিতে ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করে দেয় জান্তা সরকার।
Copyright © 2023 সময়কাল নিউজ | Design & Developed By: ZamZam Graphics