সময়কাল ডেস্ক :চ্যানেল দ্বীপ জার্সিতে ব্রিটিশ নৌ জাহাজ মোতায়েনে ফ্রান্স ভীত নয় জানিয়েছে দেশটির ইউরোপ বিষয়কমন্ত্রী ক্লেমেন্ট বিউনি। ব্রেক্সিট পরবর্তী পরিস্থিতিতে এই দ্বীপটি দুই দেশের মধ্যকার অচলাবস্থার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
বার্তা সংস্থা এএফপিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ক্লেমন্ট বলেন, উত্তেজনা বাড়ানো আমাদের উদ্দেশ্য নয়। কিন্তু ব্রেক্সিট চুক্তির পরিপূর্ণ বাস্তবায়ন করতে হবে।
এর আগে ফ্রান্স বিদ্যুৎবিচ্ছিন্ন করে দেওয়ার হুমকি দেওয়ার পর দ্বীপ রাজ্য জার্সিতে দুটি টহল নৌকা পাঠিয়েছে ব্রিটেন।
ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্যিক শর্তানুসারে ব্রিটিশ জলসীমায় ফরাসি মৎস্যজীবীদের প্রবেশে পূর্ণাঙ্গ অনুমতি দেওয়া না হলে ফ্রান্স এই হুমকি দিয়েছিল বলে জানিয়েছে রয়টার্স।
ব্রিটিশ রানির অধীন দ্বীপটির পুরো নাম বেইলিউইক অফ জার্সি। এটি ফ্রান্সের নরমঁদি অঞ্চলের উপকূলের কাছে অবস্থিত। জার্সি এক সময় নরমঁদি ডিউকরাজ্যের অংশ ছিল, যার ডিউকেরা পরবর্তীতে ১০৬৬ সাল থেকে ইংল্যান্ডের রাজায় পরিণত হন।
১৩০০ শতকে নরমঁদি ইংল্যান্ডের রাজাদের হাতছাড়া হয়ে যায় ও ডিউকরাজ্যটি ফ্রান্সের কাছে হস্তান্তর করা হয়। কিন্তু জার্সি এবং চ্যানেল দ্বীপপুঞ্জের অন্যান্য দ্বীপগুলি ইংরেজ রাজার অধীনে থেকে যায়।
এদিকে ফরাসি অবরোধের সম্ভাবনা নিয়ে জার্সির কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। তিনি দ্বীপরাজ্যটির প্রতি ব্রিটেনের অবিচল সমর্থনের কথা ব্যক্ত করেছেন।
বরিস জনসনের এক মুখপাত্র বলেন, জরুরি ভিত্তিতে উত্তেজনা প্রশমন দরকার। পূর্ব সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে দুটি টহল নৌ-যান পাঠিয়েছে যুক্তরাজ্য।
এর আগে ফ্রান্সের সমুদ্রবিষয়ক মন্ত্রী অ্যানিক গিরারডিন বলেন, একতরফা আরোপিত শর্তানুসারে জার্সি ৪১টি লাইসেন্স দিয়েছে। ফরাসি মৎস্যজীবীদের নৌকা কতক্ষণ পানিতে থাকবে, সেই শর্তও আরোপ করা হয়েছে। এ ঘটনা জানতে পেরে আমি খুব বিরক্ত।
মঙ্গলবার (৪ মে) জাতীয় পরিষদে দেওয়া বক্তৃতায় তিনি আরও বলেন, ব্রেক্সিট চুক্তি অনুসারে পাল্টা পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ আছে। আর আমরা তা ব্যবহারে প্রস্তুত।
গিরারডিন বলেন, জার্সির বিষয়ে সমুদ্রের নিচ দিয়ে বৈদ্যুতিক কেবল সরবরাহের কথা আমি আপনাদের স্মরণ করিয়ে দিতে চাই। যদিও এটা দুঃখজনক হবে, কিন্তু যদি আমাদের কোনো পদক্ষেপ নিতে হয়, তবে আমরা তা নেব।
এক লাখ ৮০ হাজার মানুষের বসবাস দ্বীপটিতে। আর বিদ্যুৎ সরবরাহের ৯৫ শতাংশই আসে ফ্রান্স থেকে।
জার্সি সরকার জানিয়েছে, মাছ ধরার অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে শর্তারোপের ঘটনায় ফ্রান্স ও ইউরোপীয় ইউনিয়ন অসন্তোষ ব্যক্ত করেছে। কিন্তু আমরা ব্রেক্সিট-পরবর্তী বাণিজ্য শর্তানুসারে অনুমোদন দিয়েছি। আমরা নতুন যুগে প্রবেশ করেছি, সেই যুগের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে হবে।
Copyright © 2023 সময়কাল নিউজ | Design & Developed By: ZamZam Graphics